সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৫:৫০ পূর্বাহ্ন

জুনের প্রথম সপ্তাহেই রোহিঙ্গা স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু

জুনের প্রথম সপ্তাহেই রোহিঙ্গা স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু

ভিশন বাংলা ডেস্ক: আগামী জুনের মধ্যে এক লাখ রোহিঙ্গাকে জনশূন্য দ্বীপ ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামাল। বৃহস্পতিবার এক ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

বুধবার জাতিসংঘের সংস্থাকে শাহ কামাল বলেন, ভাষানচরে ইতোমধ্যে ৫০ হাজার রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ী আশ্রয় শিবির গড়ে তোলা হয়েছে। বাকিগুলো দুইমাসের মধ্যে প্রস্তুত হয়ে যাবে। জুনের প্রথম সপ্তাহেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।

গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো হয়। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭ লাখ মানুষ। জানুয়ারিতে সম্পাদিত ঢাকা-নেপিদো প্রত্যাবাসন চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফিরিয়ে নেওয়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশের পাঠানো প্রথম ৮ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা নিয়েই শুরু হয়েছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। জাতিসংঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন সংস্থা ধারাবাহিকভাবে বলে আসছে, রাখাইন এখনও রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ নয়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে অবশ্যই স্বেচ্ছামূলক ও নিরাপদ হতে হবে। তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে নিরাপদে।

২০০৬ সালেই বঙ্গোপসাগরে ভাসানচর দ্বীপটির উৎপত্তি। ২০১৫ প্রথম এই পরিকল্পনার কথা বলার সময়ই অনেক সমালোচনা হয়। বিশেষজ্ঞরাও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এমন দ্বীপে প্রাকৃতিক দুযোর্গের সম্ভাবনা অনেক বেশি। ঘুর্ণিঝড় বা বন্যায় প্রাণ হারাতে পারেন হাজার হাজার রোহিঙ্গা। ভাষানচরে পুনর্বাসনের এই পরিকল্পনা বাদ দেওয়া হলেও আগস্টে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পর আবারও এটি হাতে নেওয়া হয়।

জাতিসংঘ জানায়, জুনে বৃষ্টির মৌসুমে বন্যা ও ভূমিধসের শিকারের আশঙ্কায় রয়েছে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা। সংস্থাটির আবাসন বিষয়ক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো বলেছেন, বাংলাদেশ জুনে এই প্রক্রিয়া শুরু করতে চায়। তবে এনিয়ে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।

এএফপিকে মিয়া বলেন, আমরা এই সময়ের কথাই চিন্তা করছিলাম। আর এই প্রক্রিয়াটি স্বেচ্ছায় হতে হবে। কাউকে জোর করে পাঠানো যাবে না। তাদের বোঝাতে হবে সেখানে তারা কি অবস্থায় থাকবে। সবচেয়ে কাছের জনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে দ্বীপটি এক ঘণ্টার নৌকাপথ।

বুধবার শাহ কামাল বলেছেন, আমরা এক লাখ মানুষের থাকার ব্যবস্থা করছি। ৩১ মে’র মধ্যে নৌবাহিনীর সদস্যরা ১৪৪০টিরও বেশি বড় বাড়ি তৈরি করবে।’

আসন্ন বৃষ্টির মৌসুমকে সামনে রেখেই রোহিঙ্গাদের দ্বীপটিতে সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানান শাহ কামাল। তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় অংশ নিতে পারবেন।

অনেক রোহিঙ্গা দ্বীপটিতে যেতে না চাইলেও কর্মকর্তারা আশাবাদী যে কক্সবাজার ক্যাম্পের অবস্থা দিনদিন খারাপ  হওয়াতে অনেকেই যেতে চাইবেন।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার নিয়ে তিনি জানান, দ্বীপটি যেন বৃষ্টিতে জলোচ্ছাস বা বন্যার শিকার না হয় তাই  নিম্নাঞ্চল ভরাট ও চারপাশে বাঁধ দিচ্ছে নৌবাহিনী। গত বছর নভেম্বরে এই দ্বীপের উন্নয়নে ২৮ কোটি ডলার বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ১২০টি আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com